তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দ্বিতীয় দফার পরামর্শ আগামী ১৯ এপ্রিল রোমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অ্যাক্সিওস নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক বারাক রভিদ এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তিনটি নির্ভরযোগ্য সূত্র তাকে জানিয়েছে যে শনিবার রোমে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
এই আলোচনার মাধ্যমে তেহরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক অগ্রগতি সাধনের চেষ্টা করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও ইরান নীতিকে ঘিরে স্পষ্ট মতবিরোধ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের একটি অংশ, যার মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফ এবং প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ রয়েছেন, তারা কূটনৈতিক এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে। তারা মনে করেন, একটি পারমাণবিক চুক্তির সম্ভাবনা এখনও বিদ্যমান এবং ওয়াশিংটনের কিছু ছাড়ের মাধ্যমেও এই সমঝোতা সম্ভব।
অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের নেতৃত্বে আরেকটি দল বিশ্বাস করে যে তেহরানের বর্তমান অবস্থান দুর্বল এবং তাদেরকে কঠোরভাবে চাপ প্রয়োগ করাই যুক্তরাষ্ট্রের উচিত। তারা মনে করেন, ইরান যদি চুক্তির শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায়, তবে দেশটির বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ, এমনকি ইসরায়েলের সহায়তায় হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
এর আগে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘি বলেছিলেন যে আলোচনার পরবর্তী পর্ব ওমানের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে। তবে ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প বলেছেন, বৈঠকটি রোমে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
গত ১২ এপ্রিল ওমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি পরোক্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি, এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ছিলেন বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফ। বৈঠকটি “গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে” অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান।
আগামী রোম বৈঠক নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আগ্রহ তৈরি হয়েছে, যেখানে পরমাণু ইস্যুতে দুই দেশের সম্ভাব্য সমঝোতার দিকে নজর রাখছে বিশ্ব সম্প্রদায়।