র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চেয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ র্যাবের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধে জড়িত না থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ডিজি বলেন, “র্যাবের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে গুম ও খুনের। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ সেসব বিষয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাইছি।”
তিনি আরও বলেন, “সবকিছু সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে আমরা দায়মুক্ত হতে চাই। আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করবো, কারও নির্দেশে এসব অপরাধে র্যাব আর জড়িত হবে না—এটি আমি নিশ্চিত করছি।”
র্যাব ডিজি জানান, “র্যাবে আয়নাঘরের বিষয়ে তদন্ত চলছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলির ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত করছে এবং আমরা সেই তদন্তে সব ধরনের সহায়তা করছি।”
র্যাবের ১৬ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ৫৮ জন কর্মকর্তা এবং ৪,২৪৬ সদস্যকে বিভিন্ন অপরাধে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।”
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “দেশে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন হয়েছে, তবে আমরা এখনো প্রত্যাশিত জায়গায় পৌঁছাইনি। র্যাব তার দায়িত্ব আন্তরিকতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছে।”
তিনি আরও জানান, “৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। র্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে। তবে এ কাজ করতে গিয়ে র্যাবের কিছু সদস্য বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।”
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, “৫ আগস্টের পর আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিদ্রোহ, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।”
র্যাব মহাপরিচালকের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, অতীতের ভুল শুধরে নিয়ে ভবিষ্যতে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে চায় এই এলিট ফোর্স। জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য তাদের চলমান উদ্যোগ ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।