শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। তার বক্তব্যকে ‘বানোয়াট ও উসকানিমূলক’ বলে অভিহিত করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পবন বাধেকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ নোট দিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান ও তার সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। প্রতিবাদ নোটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীর উদ্বেগ, হতাশা এবং গুরুতর আপত্তি প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন ও গণবিপ্লবের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন, যা বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
শেখ হাসিনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে উত্তেজনা দেখা দেয়। ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সেখানে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে দেওয়া প্রতিবাদ নোটে বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, শেখ হাসিনার বক্তব্য দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য হুমকি স্বরূপ। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানকালীন সময়ে হাসিনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বক্তব্য ও বিবৃতি দেওয়া বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলাদেশ সরকার ভারতকে সতর্ক করে জানায়, শেখ হাসিনার বক্তব্য দিল্লি-ঢাকা সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। একইসঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়।
এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।