বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির বিরোধের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, “সংস্কার কাজ নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির বিরোধ নেই।” তারেক রহমান আরও বলেন, সংস্কারের কাজ একটি চলমান প্রক্রিয়া, এবং এটি কখনো থামে না। তিনি বলেন, “সংস্কার আগে না, নির্বাচন আগে এই ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।”
তারেক রহমান বলেন, সংস্কারের কাজ একে অপরের দ্বারা চালিত হতে থাকে, একজন শুরু করবে, অন্যজন চলমান রাখবে। এর মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে, যা জনগণের মধ্যে ভুল ধারণা সৃষ্টি করছে। তিনি যুক্ত করেন, বিএনপি মনে করে, সংস্কারের পাশাপাশি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন, যাতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর রুহের মাগফিরাত কামনা করে তারেক রহমান বলেন, সাগর-রুনির বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, “রাষ্ট্র উদাসীন থাকবে না, এমন ব্যবস্থা চাই,” এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তারেক রহমান আরও অভিযোগ করেন, পতিত স্বৈরাচাররা দেশের ভিতর ও বাহির থেকে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি বলেন, “এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে ভিন্ন মতাবলম্বীদের শত্রু হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে, যা দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।” আওয়ামী লীগকে স্বাধীনতার শত্রু উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত জনগণের রায়ই চূড়ান্ত।”
তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী ঘরছাড়া,” এবং দাবি করেন, “মাফিয়াদের পুনর্বাসন ঠেকাতে জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এমন হওয়া উচিত, যেখানে ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হবে। এজন্য ক্ষমতাসীনদের জনগণের কাছে আরও দায়বদ্ধ হতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, “সংসদ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সংসদে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকা উচিত।” তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে, যা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
এছাড়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অনুষ্ঠানে বলেন, “প্রেস ক্লাবের ভেতরে ফ্যাসিবাদের থাবা ছিল,” এবং ছাত্রদের আন্দোলনকে ভুল বলে মন্তব্য করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, “বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে টেন্ডার ছাড়াই, কারণ সব টাকা শেখ পরিবারের কাছে চলে যাবে।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “দ্রুততম সময়ে জনগণের দাবি নিষ্পত্তি করা হবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “আগামী দিনে জনগণ মালিকানা ফিরে পাবে।” তিনি ৩১ দফার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার কথা বলেন, যেখানে জনগণকে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হবে।
বিএনপি নেতারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং সুশাসনের দাবি জানিয়ে, সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছেন। তারা মনে করেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, এবং বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।