পরিবেশ দূষণ রোধে ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণকাজে পোড়ানো ইটের ব্যবহার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
রিজওয়ানা হাসান জানান, সরকারি অফিসগুলোতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন নির্মাণ কাজে পোড়ানো ইট ব্যবহার না করা হয়। সরকার নিজেই দেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণ প্রকল্পগুলোর জন্য ইটের প্রধান গ্রাহক। সড়ক, ভবন এবং অন্যান্য বড় প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক হারে ইট ব্যবহার করা হয়। "সরকারকে পোড়ানো ইটের বিকল্প ব্যবস্থায় যেতে হবে। চাহিদা পত্র দিলে এর সমাধান সম্ভব," বলেন তিনি।
ইটভাটাকে পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, "দেশে নতুন কোনো ইটভাটার অনুমোদন দেওয়া হবে না। ৩৪৯১টি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।"
অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটাগুলো জনস্বার্থে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, ব্লক ইট তৈরির জন্য সরকার প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছে।
জিগজ্যাগ প্রযুক্তিতে পরিচালিত ইটভাটাগুলোর বিষয়ে আপাতত অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, "অনেকেই জিগজ্যাগ ইটভাটায় বিনিয়োগ করেছেন। তাদের সতর্ক করে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে যাতে তারা নিয়ম মেনে ইট উৎপাদন করেন। তবে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে এসব ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে।"
ইটভাটার দূষণ কমাতে পোড়ানো ইটের বিকল্প হিসেবে ব্লক ইট ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন উপদেষ্টা। তিনি জানান, "সরকার ব্লক ইট তৈরির কাজে প্রণোদনা দেবে। এটি পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই সমাধান হতে পারে।"
পরিবেশ রক্ষায় সরকারের এই পদক্ষেপ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে যাচ্ছে। পোড়ানো ইটের ব্যবহার বন্ধ এবং ব্লক ইটের প্রসারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে, দেশের নির্মাণ খাতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদী পরিবেশবিদরা।