বাংলাদেশের প্রতিবেদন হিসেবে এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র এক প্রতিবেদন লিখেছেন, যা আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তাতে তিনি তাঁর জীবনের কঠিন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন এবং ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র জানিয়েছেন যে, জীবনের নানা ওঠাপড়ায় কখনোই তাঁর নিজের উপর কোনও চাপ অনুভব হয়নি। তিনি সবসময় নিজের কাজ নিজেই জোগাড় করে এসেছেন এবং কখনোই তথাকথিত ‘সুগার ড্যাডি’-র সাহায্য নেননি।
তাঁর মতে, ভালোবাসার মানুষের অভাব তাঁর জীবনে এক অদ্ভুত বাস্তবতা, কিন্তু এর পরও তিনি আত্মবিশ্বাসী, কারণ তিনি তাঁর জীবনের সমস্ত সিদ্ধান্ত নিজের হাতে নিয়েছেন। “সব মিলিয়ে নিজেই আমার হর্তাকর্তা-বিধাতা,”—এমনটি জানিয়েছিলেন শ্রীলেখা। তবে, সম্প্রতি আরজি কর-কাণ্ডে সরকারের বিরোধিতা করায় তাঁর কাজের সুযোগে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দু-দুটো বিজ্ঞাপনের কাজ হাতছাড়া হয়ে গেল। ক্লায়েন্ট যোগাযোগ করেছিলেন এজেন্সির সঙ্গে। এজেন্সির প্রতিনিধি আমাকে পছন্দ করেন, তিনি চেয়েছিলেন আমি কাজটা করি। তবে তাঁরও কোথাও বাধা রয়েছে। তিনি জানালেন, ‘তোমার বক্তব্য তোমার বিরুদ্ধে গেছে, সরকারকে বিরোধিতা করেছ। কাজ করানোর জন্য নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’’
এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও শ্রীলেখা মিত্র বিচলিত নন। তিনি জানান, তাঁর জন্য আর এই ধরনের ঘটনায় বিচলিত হওয়া কোনো ব্যাপারই নয়। “কোনোকালেই মধু মাখিয়ে কথা বলতে পারি না। বাকিরা যতটা না মনের গভীর থেকে মৃতা চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছেন, আমার চাওয়া ছিল আরও গভীর,”—এমন মন্তব্য করেন তিনি।
শ্রীলেখা মিত্র আরও জানিয়েছেন, “ভয় না পাওয়ার কারণ, আমার মাথার ওপর কোনো দায় নেই। ঋণের বোঝা নেই, প্রচুর চাহিদা নেই। দামি গাড়ি, বাড়ি বা পোশাকের বিলাসিতা আমার জীবনে নেই। ফলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজনও নেই।” তিনি নিজেকে একজন সৎ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেন এবং দাবি করেন যে, যতটা সম্ভব সৎ থেকে কাজ করতে চান। “একমাত্র দেয়ালে পিঠ ঠেকে না গেলে মিথ্যা কথা বলি না। বললেও এমন মিথ্যা বলি না, যা অপরের ক্ষতি করবে,”—এমন স্পষ্ট বক্তব্য দেন শ্রীলেখা।
শ্রীলেখা মিত্রের এই প্রতিবেদনটি তাঁর নীতির এবং জীবনের দৃঢ় অবস্থানকে তুলে ধরে, যেখানে তিনি ব্যক্তিগত সুখ এবং স্বার্থের প্রতি অনুরাগ না রেখে, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপনে বিশ্বাসী। তাঁর এই সৎ জীবনযাপন, সত্যবাদিতা এবং সরকারের বিরোধিতায় অবস্থান, তাকে এক অনন্য অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে, যেখান থেকে তিনি আরও সুদৃঢ়ভাবে সমাজের জন্য কাজ করতে পারবেন।