গাজীপুরের তেলিপাড়া এলাকায় অবস্থিত ইস্মোগ সোয়েটার কারখানায় শ্রমিকদের অভিযোগের সন্ত্রাসাত্মক ঝড় তুলে ধরেছে শ্রমিকদের দাবির সংগ্রাম। শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশিত ঈদ বোনাস, ২৫ ভাগ উৎপাদন বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিলসহ মোট ১৪টি দাবির আদায়ে উত্তেজিত হয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। তাদের দাবি ও অসন্তোষ আর্থিক অধিকার ও শ্রমিক সুবিধার ওপর দীর্ঘকালীন অবহেলার ফলস্বরূপ, আজ সকালে কর্মে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভের আকারে মঞ্চে আত্মপ্রকাশ করে।
প্রথম দিকে, শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান গ্রহণ করে অবরোধ সৃষ্টি করে, যার ফলে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট ও অসংখ্য যাত্রীর ভোগান্তি দেখা দেয়। পরিস্থিতির তীব্রতা ক্রমশ বাড়তে থাকলে, সেনাবাহিনী হ্যান্ড মাইকে স্পষ্ট ও কঠোরভাবে ঘোষণা করে যে, “আপনাদের ৭ মিনিটের মধ্যে সাইডে যাওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।” এই সতর্কবার্তার মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে, প্রায় ১ মিনিটের মধ্যেই শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে রাস্তা ছেড়ে সরে যায়।
সেনা কর্মকর্তার ঘোষণা একদিকে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে নেগোসিয়েশনের আশ্বাস দেয়, আবার অন্যদিকে রোড ব্লক ও জনভোগান্তি রোধে কঠোর শাস্তির হুমকি দিয়ে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তেলিপাড়ার ইস্মোগ সোয়েটার কারখানায় প্রায় ১২ শতাধিক শ্রমিক কাজ করলেও, ওভারটাইম বিল, নাইট বিল, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও বাৎসরিক বেতনের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারকে আঘাত করে।
এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র একদিনের ঘটনা নয়, বরং শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের প্রতিফলন। মালিকপক্ষ ও শ্রমিকের মাঝে যদি কোনো অমিল থাকে, তা নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস থাকলেও, মাঠে প্রচণ্ড চাপে শ্রমিকদের জোরালো প্রতিবাদের ছবি ফুটে ওঠে। প্রতিবাদের পর, সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে মালিকপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে দাবির পূরণের আশ্বাস দেওয়ার ফলে অবরোধ ধীরে ধীরে শিথিল হয়।
এই ঘটনাটি শ্রমিক অধিকারের প্রশ্নকে আবার জাগিয়ে তুলেছে – শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, ওভারটাইম ও অতিরিক্ত সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না। তেলিপাড়ার এই প্রতিবাদ, শ্রমিকদের স্বল্পস্বার্থের জন্য নয়, বরং শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ন আন্দোলনের সাক্ষ্য বহন করে, যা ভবিষ্যতে আরও গভীর আলোচনা ও কার্যকরী পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে।