সৌদি আরবে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ চাঁদ দেখার ব্যাপারে ভুল তথ্য দিয়েছে, যার ফলে ঈদুল ফিতর একদিন আগেই উদযাপন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দেশটির জনগণের মধ্যে কাফফারা দেওয়ার প্রস্তাবও উঠেছে। তবে এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।
কিছু আরব দেশ রোববার (৩০ মার্চ) ঈদ ঘোষণা করলেও মিশর, জর্ডান, সিরিয়া এবং সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ অন্যান্য দেশ সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত মানেনি এবং সোমবার ঈদ উদযাপন করেছে। একইভাবে, শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান এবং ওমানের ইবাদি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষও সোমবার ঈদ পালন করেছে।
বিশ্বের অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ সৌদি আরবের চাঁদ দেখার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, সৌদি আরবে যে দিন শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেদিন সূর্যগ্রহণের কারণে চাঁদ দেখা সম্ভবই ছিল না। আবুধাবির আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্রও জানিয়েছে, পূর্ব গোলার্ধে সেদিন চাঁদ দেখার কোনো সুযোগ ছিল না।
নিউ ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ইমাদ আহমেদ বলেন, "ইসলামি মাসগুলো চাঁদের নতুন পর্যায় থেকে নয়, বরং অর্ধচন্দ্রের পর্যায় থেকে শুরু হয়।" তার এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকে মনে করছেন, এর ফলে কোটি কোটি মুসলিম একদিন আগেই রোজা শেষ করেছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালে সৌদি চাঁদ দেখার কর্তৃপক্ষ ভুল করে শনি গ্রহকে চাঁদ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। ২০১৯ সালেও একই ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ উভয় ঘটনার প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি উৎসবে চাঁদ দেখা নিয়ে মাঝে মাঝে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। কিছু দেশ আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়, আবার কেউ কেউ খালি চোখে চাঁদ দেখে ঈদ পালন করে। এই বিতর্কের মধ্যে ইসলামে চাঁদ দেখার সঠিক পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে আছে।