বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পীরগাছা এলাকায়।
গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগ নেতার নাম রাদিয়াদ হোসেন ওরফে বর্ণ। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির স্কুলছাত্র-বিষয়ক সম্পাদক। রাদিয়াদ উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের কামারচট্ট গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রাদিয়াদ দীর্ঘদিন ধরে রামেশ্বরপুর এলাকার স্কুলছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। তাঁর আচরণে এলাকাবাসী এতটাই বিরক্ত হয়ে পড়েন যে, কয়েকদিন আগে তাঁর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে তখন পরিস্থিতি শান্ত হয়।
কিন্তু গতকাল এক স্থানীয় স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাঁকে আটক করে গাছে বেঁধে গণধোলাই দেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর বলেছেন, “রাদিয়াদ আমাদের বর্তমান কমিটির সদস্য। তাঁর মা-বাবা নেই। পারিবারিক হতাশা থেকে তিনি এমন খারাপ কিছু করে থাকতে পারেন। তবে দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে এমন আচরণ সমর্থনযোগ্য নয়।”
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিক ইকবাল জানান, “রাদিয়াদ হোসেনের আচরণে এলাকাবাসী এতটাই বিরক্ত ছিল যে, তাঁর বিরুদ্ধে মানববন্ধন পর্যন্ত করতে চেয়েছিল। পুলিশের আশ্বাসে তখন তারা শান্ত হয়। তবে গতকাল পুনরায় একই অভিযোগ আসার পর তাঁকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পূর্বে করা একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাদিয়াদের কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী সহ্য করে আসছিল। তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে গতকাল শেষ পর্যন্ত কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তারা।
এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে মনে করছেন, আইনের প্রতি আস্থা রেখে এমন ঘটনার সমাধান হওয়া উচিত।
এমন ঘটনা শুধু স্থানীয় একটি সমস্যাই নয়, এটি সামাজিক শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে একটি বড় ইস্যু। স্কুলছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।