যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের কঠোর অবস্থান নিয়েছেন দেশটির অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল ২০২৫), হার্ভার্ডের কর্মকাণ্ডকে "তামাশা" আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, "বাইরের রাজনৈতিক তদারকি মানতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাদের সরকারি গবেষণা তহবিল বাতিল করা উচিত।"
ট্রাম্প প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংস্থা (IRS)-কে অনুরোধ করেছে হার্ভার্ডের কর-ছাড় সুবিধা বাতিল করার জন্য। এর আগের দিনই ট্রাম্প এই হুমকি দিয়েছিলেন এবং এবার তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হলো।
ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, "হার্ভার্ড এখন আর সম্মানজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়। একে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত। এটি ঘৃণা ও মূর্খতা শেখায়।"
ট্রাম্প এর আগেই হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দকৃত ২২০ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসনের দাবি, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়া, নিয়োগ এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর সরকারি তদারকি মানতে অস্বীকৃতি জানানোয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, "হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব স্বাধীনতা এবং সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কোনো আলোচনায় যাবে না।"
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন নোবেল বিজয়ী বের হয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠানের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে অনেকেই শিক্ষাক্ষেত্রে স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে "অতিমাত্রায় বামপন্থী" বলে সমালোচনা করে আসছে। তবে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠান ট্রাম্পের কিছু দাবি মেনে নিলেও, হার্ভার্ড সম্পূর্ণরূপে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
বর্তমানে IRS প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে চলার ইঙ্গিত দেয়।