দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তেঘরিয়া বিটি মাঠে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে—যেকোনো মূল্যে। এমন দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “কাফনের কাপড় পরার প্রয়োজন হলেও এই মাঠে বৈশাখী মেলা হবেই। যুগের পর যুগ ধরে এই মাঠে মেলা হয়ে আসছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা এই মাঠে কোনো মেলার আয়োজন করতে পারিনি। এখন খুনি হাসিনা নেই, আমরা মুক্ত। তাই আনন্দ উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে মেলা হবে।”
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানান, ১৮৪২ সাল থেকে মাঠটি বিটি মাঠ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ক্ষমতায় থাকাকালীন এই মাঠটি অবৈধভাবে তার বাবার নামে নামকরণ করেন এবং কোনো অধিগ্রহণ ছাড়াই তা দখলে নেন। পরবর্তীতে জানা যায়, মাঠটি ক্রীড়া উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চলে গেছে—যা তাকে হতাশ করেছে।
তিনি বলেন, “প্রাচীন কাল থেকেই এই মাঠে বৈশাখ মাসে মেলার আয়োজন হতো। বিগত সরকারের সময় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন জনগণ স্বাধীনভাবে এই মেলা উদ্যাপন করবে।”
মাঠ পরিদর্শনকালে বিএনপি ও স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন: অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি, জান্নাতুল মাওয়া, কেরানীগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি), শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি), মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম সুমন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মোজাদ্দেদ আলী বাবু, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, অন্যান্য বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সম্প্রতি বিটি মাঠে বৈশাখী মেলা আয়োজন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা সমালোচনার ঝড় উঠে। সমালোচনার জেরে ১০ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া মেলার অনুমতি বাতিল করেন।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, মেলা হবে—যা-ই ঘটুক। তাদের দাবি, এটি কেবল একটি মেলা নয়, জনগণের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের প্রশ্ন।