জামালপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক কাচারী শাহী জামে মসজিদ ও সংলগ্ন মাঠের অবস্থা আজকের দিনে অত্যন্ত দুঃখজনক। ৬০ এর দশকে স্থাপিত এই মসজিদ ও মাঠটি একসময় ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্য, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জনসেবার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো। তবে বর্তমানে, মাদকসেবি ও অবৈধ দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে এই স্থান, যা ঢালাই হয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি ও মানবিক মর্যাদাকে।
জামালপুর জেলা মডেল মসজিদ নির্মানের সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, জেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ হাতে একটি সৌন্দর্যপূর্ণ ঈদগাহ মাঠ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যেখানে জানাজার নামাজ আদায় করা হবে। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে সেই প্রতিশ্রুতি কখনও বাস্তবায়িত হতে পারেনি।
আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন কমিটির সভায় সুস্পষ্ট আলোচনার সত্ত্বেও মাঠ নির্মাণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। সর্বশেষ, জেলা প্রশাসক শফিউর রহমান স্যার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিডি সাহেবকে দিয়ে বিক্রির প্রক্রিয়া চালু করেছিলেন, যা রহস্যজনকভাবে স্থগিত থাকে।
পরিত্যক্ত এই মসজিদ ঘরে বর্তমানে ১২টি এসি ও ৩০টি ফ্যান ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ছে। অনেক মূল্যবান সামগ্রী ইতিমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। মসজিদ, যার নামে জমির ৮৬ শতাংশ অংশ অধিকার করা ছিল, তা এখন প্রভাবশালী এমপি ও জেলা আওয়ামী নেতাদের দ্বারা জবরদখলের মাধ্যমে পার্কে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সৌন্দর্যপূর্ণ ঈদগাহ মাঠের পরিবর্তে, কপোতদের অশ্লীল আড্ডার জন্য নিরাপদ স্থান তৈরি করা হয়েছে – যা আমাদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উপর হানা দেয়।
আমাদের দাবি নিষ্পক্ষ ও ন্যায্য, পরিত্যক্ত মসজিদ ঘরের এসি, ফ্যানসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী বিক্রি করে ১০ লাখ টাকার বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ করা হোক। অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে ঐতিহাসিক ঈদগাহ মাঠ নির্মাণের কাজ শুরু করা হোক। অবৈধ স্থাপনা অবিলম্বে উচ্ছেদ করা হোক যাতে মাঠের প্রকৃত সৌন্দর্য ফিরে আসে। নিরাপত্তার জন্য সুরক্ষিত দেয়াল নির্মাণ করা হোক। মসজিদের নামকরণ করে “কাচারী শাহী ঈদগাহ মাঠ” হিসেবে একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করা হোক, যা আগামী ঈদুল আজহায় আদায়ের জন্য পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করবে।
আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আন্তরিক আবেদন জানাচ্ছি – “আমাদের ঐতিহ্য, ধর্মীয় অনুভূতি ও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষায় অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমাদের দাবিময় এই আবেদন শুধুমাত্র সুবিধার্থে নয়, বরং আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মর্যাদা ফেরানোর আবশ্যকতা প্রকাশ করে।”
শ্রদ্ধেয় প্রশাসক মহোদয়, আমাদের আবেদন আপনার নজরে আনার পর আমরা বিশ্বাস করি, জমাটবাঁধা নীতি ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই ঐতিহ্যবাহী স্থানকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।