কিশোরগঞ্জে রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির একটি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে রেলওয়ে থানা-পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে রেলওয়ে পুলিশের অভিযানে কিশোরগঞ্জ শহরের বটতলা এলাকা থেকে শুরু হয় এই অভিযান, এবং সেখানে ৭০টি আসনের মধ্যে ১৯টি টিকিট উদ্ধার করা হয়। আটক দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন আবদুর রাজ্জাক, যিনি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব তারাপাশা এলাকার বাসিন্দা, এবং অন্যজন তপু চন্দ্র বর্মণ, যিনি তাড়াইল উপজেলার বরুহা গ্রামের বাসিন্দা।
রেলওয়ে পুলিশ জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের একটি টিম কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালায়। প্রথমে আবদুর রাজ্জাককে আটক করা হয়, তার কাছে ১৫টি আসনের ৪টি টিকিট পাওয়া যায়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজ রোডে অভিযান চালিয়ে তপু চন্দ্র বর্মণকে আটক করে। সেখানে পুলিশের হাতে ৫৫টি আসনের ১৫টি টিকিট, একটি স্ক্যানার প্রিন্টার এবং একটি কম্পিউটারও উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুই ব্যক্তি পুলিশকে জানান, তারা পরিচিতদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে অনলাইন থেকে একাধিক টিকিট সংগ্রহ করতেন। পরে, ফেসবুকের বিভিন্ন পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রকৃত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ দামে এসব টিকিট যাত্রীদের কাছে বিক্রি করতেন। তারা ১৬০ টাকা মূল্যের টিকিট ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতেন, যার মাধ্যমে তারা লাভবান হতেন।
রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছিলেন এবং এই টিকিট কালোবাজারি চক্রের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য পেয়েছেন। অভিযানের পর, আটক দুই ব্যক্তি তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন।
এই ঘটনায় শুক্রবার সকালে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে আরো তথ্য উঠে আসতে পারে, এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কালোবাজারি চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
এই ঘটনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে যাতে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি রোধ করা যায়। তারা সিস্টেমে আরও জোরালো নজরদারি এবং সুনির্দিষ্ট কৌশল ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া, যাত্রীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যেন তারা যেন কোনো ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের শিকার না হন।
কিশোরগঞ্জে টিকিট কালোবাজারি চক্রের দুজন সদস্য আটক হওয়া এমন একটি চক্রের বিরুদ্ধে রেলওয়ে পুলিশের সাফল্যজনক অভিযান। তবে, ভবিষ্যতে যেন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য টিকিট সিস্টেমে আরো উন্নয়ন এবং যাত্রীদের সচেতনতা বৃদ্ধি অপরিহার্য।