বাজারে বর্তমানে আলুর দাম এখনো উচ্চ পর্যায়ে রয়ে গেছে, তবে পেঁয়াজ এবং শীতের সবজির ক্ষেত্রে দাম কিছুটা কমার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি প্রতি দাম ৭০-৭৫ টাকায় স্থির থাকলেও পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
খুচরা এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম এখনো বেশি থাকায় খুচরা বাজারেও এই পণ্যের দাম কমানো সম্ভব হয়নি। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে আলুর দাম বাড়তি রয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৬০-৬৫ টাকা, যা বর্তমানে ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ তিন সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আলুর দাম ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর টাউন হল এবং কলমিলতা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনের হিমাগারে যথাযথ নজরদারি না থাকায় আলুর দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমেছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বর্তমানে কেজি প্রতি ১২০-১৩০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম মানভেদে কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা বেশি ছিল।
শ্যামবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৮০-৮৮ টাকায় এবং পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দামেও প্রভাব পড়েছে।
শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ার ফলে দাম কমতে শুরু করেছে। তিন সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি শিমের দাম ছিল ২৩০-২৪০ টাকা, যা এখন কমে ১০০-১২০ টাকায় এসেছে। এছাড়া ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকা, শালগম ১০০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা এবং লাউ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম বর্তমানে প্রতি লিটার ১৭০-১৭২ টাকা এবং পাম তেল ১৬২-১৬৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৬-১৭ টাকা এবং পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বেড়েছে। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও খুচরা ব্যবসায়ীদের কমিশন ৩-৪ টাকা কমানো হয়েছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম বেশ কিছুদিন ধরে ১৯০ টাকা কেজিতে স্থির রয়েছে। তবে সোনালি মুরগির দাম কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়ে গেছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দামও প্রতি ডজন ১৪৫-১৫০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।
মোটের ওপর, বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দামের মধ্যে মিশ্র প্রভাব দেখা যাচ্ছে। যেখানে আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে, পেঁয়াজ ও শীতের সবজির দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল এবং সোনালি মুরগির মতো কিছু পণ্যের দাম বাড়তি রয়েছে। বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানো এবং আমদানিকৃত পণ্যের সরবরাহ বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।