রাজধানীর ডেমরায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি)-এ কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী এলাকা। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ডিএমআরসি-তে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী ও সরঞ্জাম নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং হামলা ও ভাঙচুরে জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দেন।
পুলিশ জানায়, যাত্রাবাড়ী এলাকায় ডেমরাগামী শিক্ষার্থীদের ঠেকানোর জন্য ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীরা সেই ব্যারিকেড ভেঙে ডেমরায় গিয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালায়।
রোববার ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসকের গাফিলতিতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যুর অভিযোগে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল ঘেরাও ও ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে ঘটনাটি সংঘর্ষে রূপ নেয়।
হাসপাতাল ঘেরাওয়ের সময় কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদেরও পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। ন্যাশনাল মেডিকেলের পাশাপাশি ওই দুটি কলেজেও ভাঙচুর চালানো হয়।
রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীরা দলে দলে ন্যাশনাল মেডিকেলে আসতে শুরু করেন। তাদের অভিযোগ, অভিজিতের চিকিৎসায় গাফিলতি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসার অভাবে তার মৃত্যুর বিচার চাইতে গিয়ে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল ঘেরাও করে।
এক পর্যায়ে, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল থেকে সরে গিয়ে কলেজ এলাকায় হামলা চালায়।
হামলার সময় কবি নজরুল কলেজ এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজে পরীক্ষা চলছিল। হামলার ফলে পরীক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে এলোপাতাড়ি ছুটতে থাকেন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পরে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দিলে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। তারা হামলা-ভাঙচুর এবং অর্থ লুটপাটের অভিযোগ করেন।
ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, অভিজিতের মৃত্যুর সঠিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। অন্যদিকে, কবি নজরুল এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে।
ডেমরা এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। হামলা ও সংঘর্ষে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
এই সংঘর্ষ এবং হামলার ঘটনায় পুরো ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসন এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের সাথে সংলাপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অভিজিতের মৃত্যুর যথাযথ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।