1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
ডেঙ্গুর থাবায় ৫০৯ প্রাণহানি: প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ কতটা জরুরি? - RT BD NEWS
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দেওয়ানগঞ্জে গাছ কাটার সময় পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্বভার গ্রহণ ও প্রথম সভা অনুষ্ঠিত নকশা লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা: রাজউক চেয়ারম্যান নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ! নেট রানরেটের জোরে বাদ পড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম G2G চুক্তির আওতায় সাড়ে ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল পৌঁছেছে কুয়েটে উপাচার্যের প্রতীকী গদি জ্বালিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ বাংলাদেশের বর্তমান নেতৃত্বের ‘ভারত-বিরোধী কৌশল’ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি, বাড়ছে অর্থনৈতিক চাপ গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা: দুই দিনে নিহত ৯২ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব পর্যালোচনায় হামাস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গাজীপুরে মা নিজে দুই শিশু সন্তানকে বঁটি দিয়ে নির্মম হত্যা করেছেন

ডেঙ্গুর থাবায় ৫০৯ প্রাণহানি: প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ কতটা জরুরি?

প্রতিবেদকের নাম :
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
সম্পাদকীয়

ডেঙ্গু বর্তমানে বাংলাদেশে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সংকটে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর, বিশেষ করে বর্ষাকাল থেকে শীতের প্রারম্ভ পর্যন্ত, ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরেই ডেঙ্গুতে ৫০৯ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির পেছনে অপর্যাপ্ত পরিকল্পনা, সঠিক সময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতা এবং নাগরিক অসচেতনতা কাজ করেছে। এই প্রতিবেদনে ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধে গৃহীত এবং সম্ভাব্য পদক্ষেপ বিশদে আলোচিত হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম থেকে ডিসেম্বরের প্রথম চার দিনে ডেঙ্গুতে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০৯ জনে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ সর্বাধিক। এর বাইরে খুলনা, বরিশাল, এবং চট্টগ্রাম বিভাগের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক।

পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। বিশেষত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে সর্বোচ্চ ২১৩ জনের। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা এখনো ঊর্ধ্বমুখী।

ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এই মশা সাধারণত পরিষ্কার এবং জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, এবং পরিবেশ দূষণের কারণে এডিস মশার আচরণে পরিবর্তন এসেছে। এখন এ মশা দূষিত পানিতেও বংশবিস্তার করতে সক্ষম।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে একটি সুসংগঠিত এবং কার্যকর পরিকল্পনার অভাব বরাবরই লক্ষ্য করা যায়। প্রতিটি বর্ষাকালেই ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, যা বছরের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পূর্বাভাসযোগ্য। কিন্তু এই সময়ের আগে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়া এবং সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব স্পষ্ট। মশা নিধন কর্মসূচি প্রথাগতভাবে চালু হলেও তা সঠিক সময়ে বা যথাযথভাবে কার্যকর হয় না। স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্যখাত এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে সমস্যাটি প্রতিবারই ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, এবং স্থানীয় সরকার মিলে কাজ করার প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয় দেখা যায় না। উদাহরণস্বরূপ, মশা নিধনের জন্য কী ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হবে বা কোন এলাকায় ফগিং বেশি প্রয়োজন, তা নিয়ে একে অপরের মধ্যে দোষারোপ চলে। এছাড়া তথ্য সংগ্রহ এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণের জন্য একটি কার্যকর ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের অভাবও সমন্বয়ের বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাধারণ নাগরিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক ক্ষেত্রেই নাগরিকদের অসচেতনতা ডেঙ্গুর বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখে। বেশিরভাগ মানুষই বাড়ির আশপাশে বদ্ধ পানি জমতে দেয়, নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে না এবং ডেঙ্গুর ঝুঁকি সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখে না। মশার কামড় এড়ানোর জন্য মশারি বা রিপেলেন্ট ব্যবহারে অনীহা, এবং ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো উপেক্ষা করা এই অসচেতনতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। জনসচেতনতার অভাব কেবল রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় না, এটি আক্রান্ত রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াকেও জটিল করে তোলে।

জলবায়ু পরিবর্তন বা ক্লাইমেট চেঞ্জ ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অসময়ের বৃষ্টির কারণে মশার প্রজননক্ষেত্র বেড়ে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখন এমন সব এলাকায়ও ডেঙ্গু দেখা দিচ্ছে, যেখানে আগে এটি ছিল না। এডিস মশা বেঁচে থাকার জন্য উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া উপযুক্ত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই উপযোগী পরিবেশের বিস্তৃতি আরও বাড়ছে, যা ডেঙ্গুর মতো রোগকে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন করে তুলছে।

দ্রুত নগরায়ণ ডেঙ্গুর বিস্তারে সরাসরি ভূমিকা রাখে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা শহরগুলোতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং বাসস্থান নির্মাণে অদূরদর্শী পরিকল্পনা ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়ায়। শহরের অপরিচ্ছন্ন এলাকা এবং নির্মাণাধীন ভবনগুলো মশার জন্য আদর্শ প্রজননক্ষেত্র তৈরি করে। এছাড়া জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি থাকায় ডেঙ্গু দ্রুত এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়ায়। অপরিকল্পিত নগরায়ণের প্রভাব কমাতে একটি দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিবেশবান্ধব নগর ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি এখনও অনেক ক্ষেত্রে দুর্বল। রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য নয়, বিশেষত প্রত্যন্ত এলাকায়। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় শয্যা, ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি থাকে। প্লাটিলেট কাউন্টের মতো জরুরি পরীক্ষাগুলো অনেক সময় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এছাড়া দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং সচেতনতার অভাবও সমস্যা জটিল করে তোলে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা। এডিস মশা সাধারণত বদ্ধ পানিতে বংশবিস্তার করে। তাই বাসা-বাড়ি, নির্মাণাধীন ভবন, অফিস এবং আশপাশের এলাকায় বদ্ধ পানির উৎসগুলো চিহ্নিত করে তা ধ্বংস করতে হবে। টায়ার, কৌটা, ফুলের টব, পলিথিন বা যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পানি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া সাপ্তাহিক পরিষ্কার অভিযান চালিয়ে এলাকাবাসীকে যুক্ত করা হলে মশার প্রজনন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

অপরিকল্পিত নগরায়ণ মশার বিস্তারের জন্য বড় ভূমিকা রাখে। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ সিস্টেম, জমে থাকা পানি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায়। একটি কার্যকর নগরপরিকল্পনার মাধ্যমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জোরদার করা এবং নির্মাণাধীন ভবনগুলোর নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং পরিবেশবান্ধব নগর ব্যবস্থাপনা চালু করতে হবে।

সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মশা নিধনের জন্য কার্যকর ওষুধ ব্যবহার, নির্ধারিত সময় অন্তর ফগিং মেশিন দিয়ে মশা মারার ব্যবস্থা করা এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে মশার প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত করা এবং তা ধ্বংসের ব্যবস্থা করতে হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে শিশু-কিশোর এবং তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। এজন্য স্কুল-কলেজে সচেতনতা কর্মসূচি চালু করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গুর লক্ষণ, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানানো উচিত। শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে ছোট ছোট কার্যক্রম যেমন পরিচ্ছন্নতা অভিযান, প্রজননস্থল খুঁজে বের করা এবং নিয়মিত সচেতনতামূলক আলোচনা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতকে শক্তিশালী করা অপরিহার্য। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট তৈরি করা উচিত। পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে হবে। প্লাটিলেট কাউন্ট এবং ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষার সরঞ্জাম সহজলভ্য করতে হবে। বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে শক সিনড্রোম এবং অন্যান্য জটিলতার চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ডেঙ্গু রোগ দ্রুত শনাক্ত করার জন্য সুলভ ও সহজলভ্য ডায়াগনস্টিক ব্যবস্থা চালু করা দরকার। উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের সুবিধা চালু করতে হবে। সরকারিভাবে বিনামূল্যে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করলে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। রোগীর তথ্য সংরক্ষণ এবং তা দ্রুত বিশ্লেষণের মাধ্যমে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত নজর দেওয়া যেতে পারে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিকদের সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং স্থানীয় উদ্যোগের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বাসা-বাড়ি এবং আশপাশের এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা, বদ্ধ পানি না জমতে দেওয়া, মশারি ব্যবহার এবং ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে মানুষকে অবহিত করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো যৌথ উদ্যোগ নিলে সচেতনতা বৃদ্ধি সহজ হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা অপরিহার্য। স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সহযোগিতা এবং তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের আগে মশার বংশবৃদ্ধি রোধে একত্রিতভাবে অভিযান চালানো এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দ্রুত এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এনে দিতে পারে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা। নগরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করা, জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, এবং নির্মাণাধীন ভবনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখা এই ব্যবস্থাপনার অংশ হতে পারে। নাগরিকদের নিজ নিজ বাসস্থান এবং আশপাশে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন। তাছাড়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী পদ্ধতি প্রয়োগ করে মশার বংশবিস্তার রোধ করা সম্ভব।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। মশার প্রজননস্থল শনাক্ত করতে ড্রোন প্রযুক্তি এবং রোগের বিস্তার মনিটর করতে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (GIS) ব্যবহার করা যেতে পারে। দ্রুত রোগ শনাক্ত করতে এবং চিকিৎসা সহজলভ্য করতে মোবাইল অ্যাপস ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা জরুরি। এছাড়া ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেটভিত্তিক প্রচারণা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রতিবছর বর্ষার আগেই ডেঙ্গু মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ফগিং এবং মশা নিধন কর্মসূচি সময়মতো শুরু করা, হাসপাতালগুলোর শয্যা এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রস্তুতি নিশ্চিত করা, এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুদ রাখা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাছাড়া স্কুল, কলেজ এবং কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতা কর্মসূচি চালু করা হলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।

ডেঙ্গু একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ, তবে এটি মোকাবিলায় সমন্বিত পরিকল্পনা এবং সক্রিয় উদ্যোগের অভাবই প্রধান প্রতিবন্ধকতা। সমন্বিত উদ্যোগ, পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, এবং প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপগুলো একত্রে গ্রহণ করা হলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনা সম্ভব। এই সমস্যার সমাধানে নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকার ও সমাজের সব অংশের একযোগে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ডেঙ্গু মুক্ত একটি স্বাস্থ্যকর সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট