মাদারীপুরের রাজৈর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে মাতাল অবস্থায় আপত্তিকর নাচের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) তাদের ক্লোজড করা হয়, এর আগে তাদের নাচ-গানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভিডিওটি প্রায় দেড় মাস আগে ধারণ করা হলেও সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ প্রশাসনে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্য হলেন এএসআই স্বপন অধিকারী এবং মো. হাদিবুর রহমান। ভিডিওতে দেখা যায়, তারা একটি সেমিপাকা ঘরে মদ্যপ অবস্থায় নাচছেন এবং তাদের সঙ্গে একাধিক নারী উপস্থিত ছিল। নাচের দৃশ্যে আরও দেখা যায়, পাশের খাটে বসে তাল দিচ্ছিলেন রাজৈর উপজেলা যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওটি রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্যারেজের, যেখানে মাদক সেবনসহ নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে। পুলিশ সদস্য ছাড়াও যুবলীগের কয়েকজন পলাতক নেতা এসব আসরে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে পৌঁছালে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়। রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মাদ মাসুদ খান বলেন, “পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে এবং কোনো অবস্থায় আইনের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই।”
মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেছেন, “পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে এবং ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো অত্যন্ত নিন্দনীয়। কোনোভাবেই এটা পুলিশ সদস্যদের আচরণ হতে পারে না।” তিনি জানিয়েছেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দুই পুলিশ সদস্য দুই রকম সুরে কথা বলেছেন। অভিযুক্ত স্বপন অধিকারী বলেছেন, “আমি বিন্দাস মানুষ, মাঝে মধ্যে একটু আমোদ-ফুর্তি করি। তবে যদি অন্যায় হয়ে থাকে, আমি দোষী।” অপর অভিযুক্ত মো. হাদিবুর রহমান বলেন, “আমার জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধু-বান্ধব মিলে একটু আনন্দ-ফুর্তি করেছি, তবে ভিডিওটি কে ভাইরাল করল তা বুঝে আসছে না।”
এদিকে, পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছে।