
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় আমের মুকুল জানান দিচ্ছে বসন্তের বার্তা। শীতের বিদায় লগ্নে প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে আমের মুকুল, কাঁঠালের মুচি নতুন ঋতুর আগামী বার্তা দিচ্ছে। আমবাগানে মালিকেরা মুকুল ও গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে।
ভালো ফলনের আশায় আম ও কাঁঠালের বাগানীরা আগে ভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে , প্রাকৃতিক কারনেই এবার আগে থেকে আম গাছের মুকুল এসেছে। খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৩০ থেকে ৩৫ টিরও বেশি আমবাগান রয়েছে। এ ছাড়া। বাড়িতে বাড়িতে রয়েছে একাধিক আম ও কাঁঠালের গাছ। এর মধ্যে উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্ৰামে রয়েছে বড় বড় কয়েকটি আম বাগান। আম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় জাতীয় পর্যায় পুরস্কার ও পেয়েছেন উপজেলা গোয়ালপাড়া গ্ৰামের কৃষক এ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন। আম চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতিটি বাড়ি ও বাগানে বাড়ছে আম গাছের সংখ্যা। প্রতিটি গাছে মুকুলের সমারোহ হয়ে উঠেছে। বাগানীরা মুকুল ধরে রাখতে বিভিন্ন পরিচর্চায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত আম চাষী এ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন জানান, এ অঞ্চলের বেশিরভাগ বাড়ি ও বাগানে
আম রুপালী, হিমসাগর, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, কাটিমোন আমের চাষ লাভজনক হওয়ায় এ জাতীয় আমের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আম চাষীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
তিনি বলেন , আমাকে অনুসরণ করে অনেকে আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন এটা আমার জন্য আরো বেশি সফলতার বিষয়। অনেক নতুন চাষী আমার কাছে পরামর্শ নিতে আসেন। দূরদূরান্ত থেকে আমার আম বাগান দেখার জন্য অনেকে ছুটে আসেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে আমার বাগান থেকে ফরমালিন মুক্ত আম নিয়ে থাকেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে প্রতিবছর মোটা অংকের লভ্যাংশ আম বাগান থেকে উপার্জিত হয়।
স্থানীয় আম চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমের মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিধায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। তবে এ বছর আগাম মুকুলের সমারোহ দেখা দেওয়ায় স্বপ্ন বুনতে শুরু করছে আম চাষীরা।
সাধারণত ফালগুন মাসের প্রথম থেকে আমের মুকুল আসতে শুরু করে। কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে প্রথমে মুকুল, মুকুল থেকে ফুল, ফুল থেকে গুটি, গুটি বড় হয়ে পূর্ণাঙ্গ আমে রুপ নেয়। প্রতিটি পর্যায়ে আম গাছের মুকুল রোগবালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কিশোর আহমেদ বলেন, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় ৩০ থেকে ৩৫ টি আম বাগান রয়েছে। প্রতিটি বাগানে মুকুল আসার আগে এবং পরে বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। কারণ মুকুল ঝরে পড়েই আমের উৎপাদন বহুলাংশে হ্রাস পায় । মুকুল ঝরে পড়া রোধ করা গেলে উৎপাদন কয়েকগুণ বেশি হওয়া সম্ভব ছিল। এরফলে চাচীরা অধিক লাভবান হতো বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলার ভ্রম্যগাতী গ্রামের চাষী কামাল হোসেন বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে আমের অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব বলে মনে হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার আমের বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, আমের পাশাপাশি কাঁঠালের ফলন ভালো হওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে।
Like this:
Like Loading...
Related