1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
তিস্তা পাড়ে এক হাজার শয্যার চীনা বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণে স্থান পরিদর্শন দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক: ঢাকায় এসেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ জমালপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুর্নীতি ও অনিয়মের অবসান সময়ের দাবি পিরোজপুর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ইসলামপুর থানায় বেড়েছে দালাল, ২ দালালকে থানায় প্রবেশ না করতে ওসির হুঁশিয়ারি ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে তাপমাত্রা কমাতে সবুজায়নের উদ্যোগ: রিজওয়ানা হাসান আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ আবার চালু হলো দক্ষিণ এশিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ সক্রিয়: প্রেস সচিব নেশার টাকা যোগাতে গাছ বিক্রি করতে বাঁধা দেওয়ায় মাকে কুপিয়ে হত্যা নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পিরোজপুরে বাংলা বর্ষবরণ ১৪৩২ উদযাপিত

মাদারগঞ্জের ১৫ হেক্টর জমিতে সোনালি সৌরভ—সূর্যমুখীতে স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের কৃষক

জাকিরুল ইসলাম বাবু জামালপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫
সূর্যমুখী ফুল ক্ষেত
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ফুটন্ত সূর্যমুখী ফুল ক্ষেত। ছবি: জাকিরুল ইসলাম

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ফুটন্ত সূর্যমূখী মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। ফাল্গুনের তপ্ত হাওয়ায় দুলে দুলে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে দর্শনার্থীদের। একই সঙ্গে সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই ভিড় করছেন সূর্যমুখী ফুল ক্ষেতে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্যোগে বাস্তবায়ন হচ্ছে সূর্যমুখী প্রদর্শনী। এছাড়া কৃষকদের নতুন ফসল চাষে দেওয়া হচ্ছে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ। ভবিষ্যতে কৃষি পর্যটনেও সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করতে কাজ করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

এ দিকে স্বল্প খরচে অধিক মুনাফা অর্জনের ফলে সূর্যমুখী চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের মাঝে। সূর্যমুখীকে কেন্দ্র করে স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। সূর্যমুখী চাষে তেলবীজ উৎপাদনের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে কৃষি পর্যটনের নতুন সম্ভাবনাও। জনপ্রিয় সূর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত দর্শনার্থী। দূর থেকে সূর্যমুখীর ক্ষেত দেখলে মনে হবে যেন বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে গেলে চোখে পড়ে হাজারো সূর্যমুখী ফুল।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। আর গত বছর মাত্র ১ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছিল। হাইসান-৩৩, আরডিএস-২৭৫সহ বেশ কয়েকটি জাতের সূর্যমুখীর চাষ করেছেন কৃষকরা। সূর্যমুখী চাষিদের কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। এ উপজেলার চাষিরা আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করতে পারবে। চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি সূর্যমুখীর চাষ করেছেন বালিজুড়ি ইউনিয়নের কামারিয়ার চর, চরশুভগাছা, সুখনগরী এলাকার কৃষকরা। পার্টনার প্রকল্প ও বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ উপজেলায় সূর্যমুখীর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জানা গেছে, সূর্যমুখী ফুলের তেল অত্যন্ত পুষ্টিকর। এ তেলে ওমেগা-৯, ওমেগা-৬ ও লিনোলিক-জাতীয় অ্যাসিড বিদ্যমান। এছাড়া শতভাগ ফ্যাটমুক্তসহ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, পানি, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘ই’, ভিটামিন ‘কে’ ও মিনারেল রয়েছে; যা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির জন্য বেশ উপকারী।

বালিজুড়ি ইউনিয়নের কামারিয়ার চর, চরশুভগাছা, সুখনগরী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৬ থেকে ৭ ফুট লম্বা গাছের সবুজ পাতার উপরে হলুদ সূর্যমুখীর নয়নাভিরাম দৃশ্য। সূর্য যখন হেলে পড়ছে পশ্চিম আকাশের দিকে ঠিক সূর্যের দিকেই তাকিয়ে আছে ফুলগুলো। সূর্যের আলোতে ফুলগুলো তাদের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পথচারীদের অভিভূত করছে। দুপুরের পর থেকেই সূর্যমুখী বাগান নানান বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সূর্যমুখী ফুলের খেতগুলো এখন সৌন্দর্য প্রেমীদের কাছে দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। কেউ বন্ধুদের সাথে আসছেন, কেউ বা আসছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। সুখস্মৃতি ধরে রাখতে নানা ভঙ্গিতে মুঠোফোন কিংবা ক্যামেরায় ছবি তুলছেন তারা।

সূর্যমুখীর বাগান দেখতে আসা শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেত দেখতে এসেছি। আগে কখনো এতো বিশাল জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করতে দেখিনি। সবুজের মাঠে হলুদ আর সবুজ মিলে-মিশে অপরূপ এ দৃশ্য দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে এমন এক মায়াবি দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে পেরে অনেক খুশি আমি।

কামারিয়ার চর এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা বিজয় বলেন, আগে জানতাম, কেবল ফুল হিসেবে সূর্যমুখী লাগানো হয়। পরে কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনেছি, সূর্যমুখী বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়, যা তুলনামূলক দামি। ন্যায্যমূল্যে বীজ বিক্রির সুযোগ পেলে কৃষকেরা সূর্যমুখী চাষে অনেক বেশি আগ্রহী হবেন।

সুখনগরী এলাকার সূর্যমুখী চাষি মির্জা হুমায়ুন কবীর জানান, সরকারি প্রণোদনা ও প্রদশনীর মাধ্যমে বীজ ও সার পেয়ে এবছর প্রথম ২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন তিনি। প্রথমে তেমন আগ্রহ না থাকলেও ফলন দেখে অনেক ভালো লাগছে। প্রতিটি গাছে অনেক বড় বড় ফুল হয়েছে। কম খরচে অধিক ফসল পাওয়া যায় ও সূর্যমুখীর তেলের চাহিদা রয়েছে এ কারণে আমরা এই ফসলটি আবাদ করেছি। এছাড়া সূর্যমুখী ফুলের বাগানের মনোরম দৃশ্য দেখতে ও ছবি তুলতে প্রতিদিন ভীড় করছেন অনেকেই। আবহাওয়া ও বাজার ভালো থাকলে অনেক টাকা লাভ হবে।

একই গ্রামের বজলু রহমান স্ত্রীসহ সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেত দেখতে এসেছেন।

তিনি বলেন, সত্যিই সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেত দেখে মন ভরে গেছে। এমন সুন্দর মনোরম দৃশ্য দেখে যে কেউ প্রাকৃতির প্রেমে পড়ে যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি আরো বলেন, সূর্যমুখী গাছের ফাঁকে ফাঁকে যুবক-যুবতিরা ফুলের ঘ্রাণ নিচ্ছে। তারাও প্রকৃতির সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাহাদুল ইসলাম বলেন, কম খরচ ও অল্প পরিশ্রমে লাভবান হওয়ায় এবং কৃষি অফিসের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে কৃষকরা সূর্যমুখী চাষের দিকে ঝুঁকছেন। প্রতি বছরই এ উপজেলায় সূর্যমুখীর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলনও ভালো দেখা যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে চাষিরা ভালো ফলন পাওয়ার পাশাপাশি তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পেয়ে অধিক লাভবান হবেন।

তিনি আরো বলেন, সূর্যমুখী তেলের পুষ্টিগুণ যেমন বেশি তেমনি অধিক স্বাস্থ্যসম্মত। অধিক হারে চাষ বৃদ্ধি করা গেলে পুষ্টি চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হবে। পাশাপাশি ভোজ্যতেলের জন্য বিদেশ নির্ভরতা কমে যাবে। মাদারগঞ্জ উপজেলার মাটি সূর্যমুখী চাষে উপযোগী। আগামীতে কেউ নতুন করে সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হলে তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট