সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে আরেকটি ১/১১ আনার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এ সময় অনেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর বইতে স্বাক্ষর করেন।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, “আওয়ামী লীগের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সেই পথে না হেঁটে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। জনগণ তার বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা চাই, জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার ব্যর্থ হলে আরেকটি ১/১১ ফিরে আসবে, যার ভুক্তভোগী হবে রাজনৈতিক দল ও জনগণ। আমরা সন্দেহ করছি, সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ১/১১ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।” তিনি সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর অপরিসীম ভূমিকা ছিল। সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দমন শুরু করলে জনগণ সাহস পেয়েছিল। তাই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না।”
রাশেদ খাঁন বলেন, “যেহেতু ছাত্রনেতারা দল গঠন করেছে, সুতরাং সরকারে থাকা ছাত্রনেতারা পদত্যাগ না করলে সরকারের নিরপেক্ষতা নষ্ট হবে। অনেকেই এখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান করছেন। আমরা মনে করি, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব পক্ষকে নিয়ে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা দরকার।”
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে সব দলকে সঙ্গে নিয়ে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সরকারের উপদেষ্টাদের কারণে অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে এবং সরকারের মধ্যে অনেক আওয়ামী প্রেতাত্মা রয়েছে।”
গণঅধিকার পরিষদ উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বলেন, “আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল। যারা এই দেশের মানুষের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। ৫ আগস্ট আমাদের রক্ত দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ লেখা হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে আনতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল। এছাড়া, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শ হাবিবুর রহমান রিজুসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।