কাশ্মীরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশকে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে এগোনোর জন্য আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। গত ২২ এপ্রিলের পেহেলগাম হামলার পর ভারতকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানালেও পাকিস্তানকে সরাসরি সমালোচনা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তান হামলার দায় অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র রয়টার্সকে ই-মেইলে জানান, ‘আমরা ঘটনাটিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং একাধিক পর্যায়ে ভারত ও পাকিস্তানের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’ পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে দায়িত্বশীল সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যদিও পাকিস্তান এখনও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর পাকিস্তানের গুরুত্ব অনেকটা কমেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান রয়টার্সকে বলেন, ‘ভারত এখন পাকিস্তানের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ অংশীদার। যদি ভারত সামরিক প্রতিশোধের দিকে এগোয়, পাকিস্তানের জন্য তা উদ্বেগের বিষয় হবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তখন ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে সহানুভূতি দেখাতে পারে এবং হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
তবে সাবেক পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত হুসেইন হাক্কানি মনে করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনই পরিস্থিতি শান্ত করার কোনো উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস এবং সীমান্ত-সংক্রান্ত অভিযোগের কারণে প্রায়ই উত্তেজনা বাড়ে। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা নেড প্রাইসও সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সব পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষ নেবে, তবে তা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।